কোরবানিতে ফ্রিজের বাড়তি চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত ওয়ালটন l
এবার তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আগামী কোরবানির ঈদে রেকর্ড পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রির। রেফ্রিজারেটরের প্রধান মৌসুম ঈদুল আজহায় ৫ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে ফ্রিজের সিংহভাগ মার্কেট শেয়ার ওয়ালটনের। গত রোজায় স্থানীয় বাজারে দুই লাখের বেশি ফ্রিজ বিক্রি করেছে তারা। দেশের বাজারে কোরবানির ঈদকেই মনে করা হয় ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম। স্বাভাবিক প্রয়োজন ছাড়াও কোরবানির গোসত সংরক্ষণের জন্য ওই সময় ফ্রিজ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে যায়। যে কারণে বিক্রেতারা সারা বছর অপেক্ষা করেন ওই সময়ের জন্য। কিন্তু দেখা যায়, শেষ মুহুর্তে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারে না সরবরাহকারীরা। আর সেজন্যই ওয়ালটন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কারখানায় উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ।
এ অবস্থায় চলতি জুলাই ও আগস্টে ৫ লাখের মতো ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত কোরবানি ঈদের বিক্রির তুলানায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। গত বছরের কোরবানি ঈদের আগে (জুলাই ও আগস্ট) ৪ লাখের কাছাকাছি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছিল ওয়ালটনের। আর এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্রমতে, ফ্রিজ নিয়ে গবেষণার জন্য ওয়ালটনের রয়েছে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্র। সেখানে কর্মরত দক্ষ প্রকৌশলীরা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে বাজারে আনছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী লাগসই প্রযুক্তি ও ডিজাইনের রেফ্রিজারেটর। এরই মধ্যে বাজারে গ্রাহকপ্রিয়তা পেয়েছে ওয়ালটনের গ্লাস ডোর, ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার ও বড় ডিপযুক্ত বিভিন্ন মডেলের ফ্রিজ। এর বাইরে ওয়ালটনের সকল মডেলের ফ্রিজেরই রয়েছে বিশাল চাহিদা। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজের সমন্বয়ে নিজস্ব কারখানায় উচ্চমানের ফ্রিজ উৎপাদন করে সাশ্রয়ী মূল্যে তা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ায় গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে ওয়ালটন।
কর্তৃপক্ষ জানান, রোজার ঈদের পরপরই ওয়ালটন কারখানায় ফ্রিজের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে ছয় থেকে সাত হাজার ফ্রিজ। প্লাজা ও পরিবেশকদের কাছে কারখানা থেকে ২৪ ঘণ্টা ফ্রিজ ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত যানবাহন। কারখানার পাশাপাশি প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে প্রয়োজনীয় মজুদ। যাতে আকস্মিক চাহিদা বৃদ্ধিতেও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায়।
ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা জানান, বাংলাদেশের জন্য ৯২ শতাংশ আর্দ্রতা এবং ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা দিচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড স্বীকৃত ফ্রিজ ও এসির মান পরীক্ষায় দেশের একমাত্র টেস্টিং ল্যাব নাসদাৎ ইউটিএস ল্যাব থেকে মান যাচাই করে বাজারজাত করা হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। মান নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। ওয়ালটন শুধু বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী নয়; বিভিন্ন দেশের স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগি ফ্রিজ উৎপাদন ও রপ্তানি করছে। তাদের মতে, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ফ্রিজ এদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী প্রস্তুত করা হচ্ছে কিনা তা ক্রেতাদের যাচাই-বাছাই করা উচিৎ।
নির্বাহী পরিচালক (প্লাজা সেলস ও ডেভলপমেন্ট) এবং বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানা বলেন, কোরবানি ঈদের আগে ফ্রিজের ব্যাপক চাহিদা দেখা যায়। সেজন্য রোজার পরপরই উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পরিকল্পনা তৈরি করেছি। আশা করছি, ঈদকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ বাজারে ফ্রিজের যে বাড়তি চাহিদা তৈরি হবে তা ওয়ালটন মেটাতে সক্ষম হবে।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও বিপণন বিভাগের প্রধান এমদাদুল হক সরকার বলেন, তারা আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যাপারে। তার মতে, ওয়ালটনের প্রতি ভোক্তাদের আস্থা বেড়েছে। নির্ভরতা বেড়েছে। ক্রেতাদের বিশ্বাস জন্মেছে, আমদানি করা ফ্রিজের তুলনায় দেশে তৈরি ওয়ালটন ফ্রিজ অনেক উচ্চমানের, দামেও সাশ্রয়ী। তার ধারণা, সামনের দিনগুলোতে ওয়ালটন ফ্রিজের চাহিদা আরো বাড়বে। তিনি জানান, ওয়ালটনের গ্লাস ডোর, ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ও ফিফটি-ফিফটি মডেলের বড় ডিপযুক্ত ফ্রিজের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। সেই সঙ্গে চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে ওয়ালটন ডিপ ফ্রিজের।
No comments
Post a Comment